তাহলে শোন উপদেশাবলী

০১. তুমি একমাত্র আল্লাহ্‌র (গোলামী) ইবাদত করবে পবিত্র কোর’আন ও সুন্নায় বর্ণিত সঠিক ও সহজ পন্হায়।
০২. ধর্ম বিশ্বাস তথা ‘আকিদাহ্‌ ও ইবাদতের ব্যাপারে এমনকি সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র সাথে শির্‌ক নেক ‘আমলকে ধ্বংস করে দেয় এবং মানুষকে চরম ক্ষতিতে নিক্ষিপ্ত করে।
০৩. ‘আক্বীদাহ্‌ ও ইবাদত তথা সকল ক্ষেত্রেই বিদ’আত (দ্বীনে নতুন সৃষ্ট বিষয়) থেকে অনেক দূরে থাকবে। কেননা, বিদ’আত হল বিভ্রান্তি। আর বিভ্রান্তিতে লিপ্ত ব্যক্তি জাহান্নামের ইন্ধন।
০৪. সালাতকে পরিপূর্ণভাবে সংরক্ষণ করবে। (যথাসময়ে নিয়মিতভাবে আদায় করে নিবে)। কেননা, যে কেউ সালাতকে সংরক্ষণ করে এবং সালাতের ব্যাপারে সংরক্ষণশীল হয়, তার সকল কাজই হয় যথাযথ ও সংরক্ষনশীলতার ভিতর দিয়ে। পক্ষান্তরে যে কেউ এর সংরক্ষণ করে না, তার সকল কাজই হয় অরক্ষণশীল ও অপরিপূর্ণ।
উল্লেখ্য সালাতের ব্যাপারে প্রথমেই হয়ে যাবে পবিত্রা। তারপর প্রশান্ত আত্মার অধিকারিণী অতঃপর স্বস্তির সাথে খুশু-খুজুর সাথে প্রথম ওয়াক্তেই একে আদায় করে নিবে। জেনে রেখ, যার সালাত (নামাজ) ঠিক তার সবই ঠিক। আর যার সালাত ঠিক নয়, তার সবই বরবাদ।
০৫. তুমি বিবাহিতা হলে সর্বদাই তোমার স্বামীর আনুগত্য থাকবে। তার কোন চাওয়াকে প্রত্যাখ্যান করবে না এবং তার আদেশ-নিষেধের বিরুদ্ধাচরণ করবে না, যতৰণ পর্যন্ত না, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা:) কোনরূপ বিরদ্ধাচরণ করে।
০৬. তুমি তোমার স্বামীর উপস্হিতি। অনুপস্হিতিতে তথা গোপন-প্রকাশ্য সর্বাবস্হায় তার ধন-সম্পদসহ তোমার নিজেকে সংরক্ষণ করে রাখবে এবং এই ব্যাপারে মুহুর্তের জন্যেও গাফিল হবে না।
০৭. তুমি সর্বদাই তোমার প্রতিবেশীদের প্রতি ইহ্‌সান (দয়া প্রদর্শন) করবে, তোমার মুখের, সুন্দর, প্রাঞ্জল ও মিষ্টি মধুর কথাবার্তা এবং উত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে। আর তোমার ভালবাসার কোমল হাতকে সম্প্রসারিত করবে তাদের যে কোন আপদ-বিপদ ও বালা-মুসবতের মুহুর্তে। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সা:) এরশাদ করেছেন :
‘যে কেই আল্লাহ্‌ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন তার প্রতিবেশীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং তাদের অধিকার প্রদানে সচেষ্ট থাকে।’ (বুখারী)
০৮. সর্বদাই তুমি তোমার পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি ও পরিবেশকে শুভ্র-সুন্দর ও আদর্শময় করে ঘরে তুলতে থাকবে সচেষ্টময়ী, কর্মচঞ্চলা ও প্রাণোদীপ্তা। তবে বিশেষ কোন প্রয়োজন ছাড়া তুমি এর সীমানার বাইরে যাবে না। কিন্তু যখনই ঘর থেকে বাইরে বের হবে তখন এমনভাবে বের হবে, যাতে কেউই তোমাকে অনুভব করতে না পারে।
০৯. তুমি সর্বদাই থাকবে তোমার মাতা-পিতা ও শশুর-শাশুরীর প্রতি অতি যত্নবান এবং খাদিম। তুমি তাদের সাথে উত্তম বাক্যালাপ করবে আর দরীভূত করবে তাদের সকল প্রকার দুঃখ-কষ্ট, বেদনা ও যন্ত্রণাদায়ক বিষয়বস্তুকে তোমার উত্তম সাহচর্যের মাধ্যমে। তবে এর সবটাই হবে আল্লাহর আনুগত্যের অধীনে।
১০. তুমি তোমার সন্তান-সন্ততিকে সুশিক্ষায় ও সচ্চরিত্রে চরিত্রবান করে গড়ে তোলার জন্যে সর্বাধিক খেয়াল রাখবে। কেননা, তুমিই হলে তোমার সন্তান-সন্ততির প্রথম শিক্ষক। তোমার থেকেই তারা পাবে উত্তম চরিত্র। উন্নত শিক্ষা ও সর্বোত্তম নৈতিকতায় গড়ে উঠে দেশ ও দশের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অনুপম মহত্ব। তাই সর্বদাই তুমি তাদের ভাল ও সৎ কাজের প্রতি করবে উৎসাহিত এবং মন্দ ও খারাপ কাজ থেকে করবে বিমুখ ও নিরুৎসাহিত। আর ইসলামের জীবন ব্যবস্হার নিরিখে জীবন-যাপনে করে তুলবে আজন্ম অভ্যস্ত। যখন তোমার সন্তানের বয়স সাত বছর তখন থেকেই তাদেরকে সালাত আদায় করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। এবং দশ বছর বয়সে সালাত সহ ইসলামী জীবন ব্যবস্হায় তাদের উপযোগী কোন কিছু পরিত্যাগ করলে করবে মৃদু প্রহার।
আরো শুনে নাও, শিরীয় সাহিত্যিক চিন্তাবিদ হাফেজ ব্রাহিম বলেছেন : মা হল একটা শিক্ষা নিকেতন যখন তুমি তাকে তেমন করে গঠন করবে। তাহলে গঠন করলে এমন একটা জাতি যারা মূলতই উৎকৃষ্ট ধমনী দিয়ে গঠিত। মা হল একটি কানন যদি তাকে সশিক্ষা লজ্জা ও শালীনতা রসে সিঞ্জিত এবং সংরক্ষণ করো। তাহলে সে সত্যিই (সন্তান-সন্তুতি নিয়ে) পত্র-পল্লবে আচ্ছাদিত ও সুশোভিত বাগানের ন্যায় ফুটে উঠবে। মা হল সকল শিক্ষকের প্রথম শিক্ষক। যার গুণপনা ও কৃতিকলাপই যুগ-যগান্তর ধরে জগতে সুখ্যাতি অবশিষ্ট রেখেছে।
১১. সর্বাবস্হায় আল্লাহ্‌র আদেশ ও নিষেধাবলীকে যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বাধিক আল্লাহ্‌র যিক্‌রে মত্ত থাকবে এবং বেশি বেশি দান-খয়রাত করবে (তবে তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী) আমার এই উপদেশাবলী গ্রহণ করার ও সে অনুযায়ী বাস্তবে ‘আমল করা এবং এই বইটিকে ভালভাবে অধ্যয়ন করা এর অন্তর্নিহিত ভাব হৃদয়ঙ্গম করা এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনার ক্ষমতা দানের জন্যে মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার দরবারে তোমার জন্যে সাহায্য কামনা করছি। (আমীন!!!)
বোন হে আমার ! আলস্নাহ্‌ আমাদের সবাইকে সকল প্রকার ৰয়ৰতি ও খারাবী থেকে রৰা করম্নন এবং ঈমানের সাথে মৃত্যু দিন আর কিয়ামতে বেহিসাবে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করন। (আমীন!!!)।